ফ্যাটি লিভার রোগ প্রতিরোধের উপায়



প্রতিনিয়ত আমাদের খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাত্রা পরিবর্তিত হচ্ছে। ধীরে আমরা অধিক ক্যালরিযুক্ত খাদ্যগ্রহণের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ছি কিন্তু সেই তুলনায় শারীরিক পরিশ্রম করছি না। ফলে ক্রমান্বয়ে স্থূলতার হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে দীর্ঘমেয়াদী বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হবার ঝুঁকিও বাড়ছে। ফ্যাটি লিভার এর মধ্য অন্যতম।

আমাদের দেহের অভ্যন্তরের সর্ববৃহৎ অর্গান হল লিভার বা যকৃত। এটি খাদ্য পরিপাক থেকে শুরু করে দেহের বিভিন্ন কার্যাবলি সম্পাদন করতে সহায়তা করে থাকে। ফ্যাট বা চর্বি একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে যকৃতে জমা হয়ে থাকে। কিন্তু যখন এই মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেড়ে যায় তখন যে অবস্থার সৃষ্টি হয় তাকে ফ্যাটি লিভার রোগ বা ফ্যাটি লিভার সমস্যা বলা হয়ে থাকে।

ফ্যাটি লিভার রোগের প্রকারভেদঃ

এই রোগকে সাধারণত ২ ভাগে ভাগ করা হয়েছে
১. অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার
২. নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার

ফ্যাটি লিভার রোগের কারণসমূহঃ

১. স্থূলতা
২. পেটের চর্বি
৩. পরিশোধিত শর্করাজাতীয় খাদ্যগ্রহণ
৪. বিভিন্ন ধরনের কোমল পানীয় গ্রহণ করা
৫. অ্যালকোহল বা মদ পানে অভ্যস্ততা

লক্ষণঃ

১. অবসাদ
২. দূর্বলতা
৩. পেটের ডানপাশে ব্যথা অনুভূত হওয়া

প্রতিরোধ বা প্রতিকারের উপায়ঃ

১. ওজন কমানোঃ আপনি যদি স্থূলকায় হয়ে থাকেন তবে অবশ্যই আপনার ওজন কমাতে হবে। আপনার উচ্চতার তুলনায় আপনার ওজন কত হওয়া উচিত তা বিএমআই ক্যালকুলেটর এর সাহায্যে সহজেই জেনে নিতে পারবেন।

২. শর্করা জাতীয় খাদ্য সীমিত পরিমাণে গ্রহণ করাঃ আপনার দৈনিক চাহিদার ওপর ভিত্তি করে একজন অভিজ্ঞ ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট পরিমাণে শর্করা জাতীয় খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

৩. কোমলপানীয় জাতীয় খাবার পরিহার করাঃ অবশ্যই আপনাকে উচ্চ ক্যালরিযুক্ত কোমল পানীয় খাওয়ার অভ্যাস পরিত্যাগ করতে হবে।

৪. স্যাচুরেটেড ফ্যাট বা সম্পৃক্ত চর্বিযুক্ত খাবার অল্প পরিমাণে গ্রহণ করাঃ 
স্যাচুরেটেড ফ্যাট বা সম্পৃক্ত চর্বিযুক্ত বিভিন্ন খাবার যেমন বিশেষ করে গরু ও খাসির মাংস পরিমিত পরিমাণে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

৫. চিনিজাতীয় খাবার সীমিত পরিমাণে গ্রহণ করাঃ চিনিযুক্ত যে কোন খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন যদি সম্ভব হয় তবে কিছুদিনের জন্য একেবারে বাদ দিয়ে দিন।

৬. লিভার বা যকৃতের জন্য উপকারি খাবারসমূহ গ্রহণ করাঃ বিভিন্ন ধরনের খাবার যা লিভার যা যকৃতের জন্য খুবই উপকারি যেমন অলিভ ওয়েল, অ্যাভোক্যাডো, বাদাম ইত্যাদি দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় রাখার চেষ্টা করুন।

৭. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখাঃ যারা ডায়াবেটিস বিশেষত টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তারা অবশ্যই সর্বদা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন। কেননা অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ফ্যাটি লিভার রোগ সৃষ্টিতে একটি প্রভাবক হিসেবে কাজ করে থাকে।

৮. অ্যালকোহল বা মদ পান করা থেকে বিরত থাকুনঃ ফ্যাটি লিভার নামক এই জটিল সমস্যা থেকে মুক্তি লাভ করতে অবশ্যই অ্যালকোহল বা মদ একেবারেই পরিহার করুন।


No comments

Theme images by rajareddychadive. Powered by Blogger.